আনারস রসালো ও তৃপ্তিকর সুস্বাদু ফল। ফলটিতে আঁশ ও ক্যালোরি ছাড়াও প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস এবং পটাশিয়াম থাকে। কলস্টেরল ও চর্বিমুক্ত বলে স্বাস্থ্য সুরক্ষায় এর জুড়ি নেই। আসুন জেনে নিই আনারসের বিভিন্ন উপকারিতা সম্পর্কে।
আনারস মিষ্টি, রসালো ও তৃপ্তিকর সুস্বাদু ফল যা মানব দেহের জন্য অনেক উপকারি। এতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এ, সি, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস এবং পটাশিয়াম রয়েছে। ফলটিতে প্রচুর পরিমাণে আঁশ ও ক্যালোরি রয়েছে।
আনারসের উপকারিতা
স্বাস্থ্য সুরক্ষায় এ ফলের জুড়ি নেই। আসুন জেনে নিই আনারসের উপকারিতা সম্পর্কে-
পুষ্টির অভাব পূরণে
পুষ্টিগুণে ভরপুর ফলের নাম আনারস। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ এবং সি, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম ও ফসফরাস রয়েছে।
এসব অপরিহার্য উপাদান আমাদের দেহের পুষ্টির অভাব পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
হজমশক্তিকে উন্নত করতে
আমাদের হজমশক্তি বৃদ্ধি করতেও আনারসের জুড়ি নেই। আনারসে ব্রোমেলিন নামক এনজাইম থাকে যা হজমশক্তিকে উন্নত করতে সাহায্য করে।
তাই বদহজম বা হজমজনিত যে কোনো সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে আনারস খাওয়া যেতে পারে।
ভাইরাসজনিত ঠাণ্ডা ও কাশি প্রতিরোধে
আনারসে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকায় তা ভাইরাসজনিত ঠাণ্ডা ও কাশি প্রতিরোধে ভুমিকা রাখে।
তাছাড়া জ্বর ও জন্ডিস প্রতিরোধে আনারস বেশ উপকারী। এছাড়া নাক দিয়ে পানি পড়া, গলাব্যথা এবং ব্রংকাইটিসের বিকল্প ওষুধ হিসাবে আনারসের রস খেতে পারেন।
আরো দেখুন: হাঁসের ডিমের উপকারিতা
শরীরের ওজন কমাতে সহায়তা
আনারসে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার বা আঁশ থাকে। এছাড়া এতে কোন ফ্যাট না থাকায় পরিমিত পরিমানে আনারস খেলে বা আনারসের জুস পান করলে তা শরীরের ওজন কমাতে সহায়ক হতে পারে।
আনারস তাই আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণের পথ্য হতে পারে। দেহে রক্ত জমাট বাঁধতে বাধা দেয় এই ফল। ফলে শিরা-ধমনির মধ্য দিয়ে সারা শরীরে সঠিকভাবে রক্ত প্রবাহিত হতে পারে।
দাঁত ও মাড়ি সুরক্ষায়
আনারসে ক্যালসিয়াম থাকায় তা দাঁতের সুরক্ষায় কাজ করে। নিয়মিত আনারস খেলে দাঁতে জীবাণুর সংক্রমণ কম হয় ফলে দাঁত ঠিক থাকে।
এছাড়া মাড়ির যে কোনো সমস্যা সমাধান করতে আনারস বেশ কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
চোখের যত্নে আনারস
আনারস চোখের রেটিনা নষ্ট হয়ে ধীরে ধীরে অন্ধ হয়ে যাওয়া রোগ “ম্যাক্যুলার ডিগ্রেডেশন”রোগটি হওয়া থেকে আমাদের রক্ষা করে। আনারসে রয়েছে বেটা ক্যারোটিন।
প্রতিদিন আনারস খেলে এ রোগ হওয়ার সম্ভাবনা ৩০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়। ফলে সুস্থ থাকে আমাদের চোখ।
ত্বকের যত্নে আনারস
আনারসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি থাকে যা আমাদের শক্তির যোগান দেয়। এতে থাকা প্রোটিন ত্বকের মৃত কোষ দূর করে, ত্বককে কুঁচকে যাওয়া থেকে বাঁচায়।
এছাড়া দেহের তৈলাক্ত ত্বক, ব্রণসহ সব রূপলাবণ্যে আনারসের যথেষ্ট কদর রয়েছে।
হাড়ের সমস্যাজনিত রোগ প্রতিরোধ
আনারসে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম থাকে যা হাড়ের গঠনে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
এছাড়া এতে থাকা ম্যাঙ্গানিজ হাড়কে করে তোলে মজবুত। তাই খাবার তালিকায় পরিমিত পরিমাণ আনারস রাখলে হাড়ের সমস্যাজনিত যে কোনও রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।
ক্রিমিনাশক হিসেবে
ক্রিমিনাশক হিসেবে আনারসের রস ভালো কাজ করে। নিয়মিত আনারসের রস খেলে কয়েকদিনের মধ্যেই কৃমির উৎপাত বন্ধ হয়ে যায়। কৃমি দূর করতে সকালবেলায় ঘুম থেকে জেগে খালি পেটে আনারস খাওয়া উচিত।
ক্যান্সার প্রতিরোধী
ফ্রি-রেডিকেল বা মুক্ত মুলক মানবদেহের কোষের উপর বিরূপ ক্রিয়ার সৃষ্টি করে ফলে ক্যান্সার এবং হৃদরোগের মত মারাত্মক রোগ দেখা দিতে পারে।
চোখের স্বাস্থ্য রক্ষায়
গবেষণায় দেখা গেছে যে আনারস আমাদের ম্যাকুলার অবক্ষয় থেকে রক্ষা করে। এই রোগ আমাদের চোখের রেটিনা ধ্বংস করে এবং আমরা ধীরে ধীরে অন্ধ হয়ে যাই। আনারসে রয়েছে বিটা ক্যারোটিন। প্রতিদিন আনারস খেলে এই রোগের ঝুঁকি 30 শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়। এটি আমাদের চোখকে সুস্থ রাখে।
ওজন কমায়
ওজন কমাতে আনারস আমাদের অনেক সাহায্য করে। কারণ আনারসে রয়েছে প্রচুর ফাইবার এবং চর্বি রয়েছে অনেক কম। সকালে ফল খাওয়ার সময় আনারস,আনারসের সালাদ বা আনারসের জুস খাওয়া অনেক স্বাস্থ্যকর। তাই ওজন কমাতে চাইলে আনারস খান।
আরো দেখুন: ব্রকলির উপকারিতা
খালি পেটে আনারস খাওয়ার উপকারিতা
খালি পেটে আনারস খাওয়া একটি ভালো অভ্যাস।
- আনারস ফলে প্রাচুর্য ভিটামিন সি ও এ থাকে, যা আপনার শরীরের প্রতিরক্ষা ক্ষমতা বাড়ায়।
- এটি আপনাকে ঠাণ্ডা থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।
- আনারসে ফায়বার, প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম এবং ফোলেট মিলে থাকে, যা আপনার স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ভালো।
- আনারস খাওয়া ওজন কমানোর সাথে সাথে ডায়াবেটিস প্রতিরোধে সহায়তা করে এবং পাচনতন্ত্রের ক্ষমতা বাড়ায়।
- এটি মিষ্টি ও মাত্রামাত্রি হয়ে থাকে এবং আপনাকে প্রাকৃতিকভাবে হাইড্রেটেড রাখে।
সুতরাং, খালি পেটে আনারস খাওয়া আপনার স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী।
জ্বরে আনারসের উপকারিতা
আনারস একটি প্রাকৃতিক উপাদান যা আমরা সাধারণত সম্পর্ক করি আমাদের প্রচন্ড স্বাস্থ্য উন্নতি এবং রোগ প্রতিরোধে। জ্বরের সময় আনারস অনেক জনকে সাহায্য করতে পারে এবং এর কিছু উপকারিতা নিম্নরূপে বিবেচনা করা হয়েছে:
- জ্বর নির্মূলনে সাহায্য: আনারস একটি শক্তিশালী জ্বর নির্মূলক হিসাবে পরিচিত। এটি জ্বরের কারণ হলেও এটি ত্বক, শ্বাসকণ্ঠ, পেট এবং বুকের উপর তা প্রভাবিত এলাকা সহ সমস্যাগুলি মোছার জন্য ব্যবহার করা হয়।
- সহজ পাচনার সাথে মাথার ব্যালান্স: জ্বর সময় পাচনার সমস্যা হতে পারে, যা মনে রাখা অস্বাভাবিক নয়। আনারস এমনভাবে কাজ করে যেন পাচনা পদার্থগুলি শুধুমাত্র স্বল্প পরিমাণে সেরে নিয়ে যায় এবং আপনার মাথা তেমন খারাপ ব্যাপার হয় না।
- শরীরের প্রতিরোধ উন্নতি: আনারস বিভিন্ন প্রকার পোষকতা এবং এন্টিঅক্সিডেন্টগুলি সরবরাহ করে, যা আপনার শরীরের প্রতিরোধ সিস্টেমকে উন্নত করে। এটি ক্ষয়কারক ও ব্যাকটেরিয়াল আক্রমণ সম্প্রতি থাকা সমস্যাগুলির বিরুদ্ধে রক্ষা করতে সাহায্য করে।
- স্বাস্থ্যকর বৃদ্ধি: আনারস শক্তিশালী প্রাকৃতিক উপাদান হিসাবে পরিচিত, যা স্বাস্থ্যকর বৃদ্ধির উপকারিতা সরবরাহ করে। এটি একটি উচ্চ পোষকতা সম্পন্ন খাবার হিসাবে পরিচিত এবং আপনার শরীরে আবশ্যিক পোষক উপাদানগুলির সরবরাহ করে।
- বিষাক্ততা নিরাপত্তা: আনারসের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হল এন্টিঅক্সিডেন্ট, যা বিষাক্ততা নিরাপত্তা প্রদান করে। এটি মহাকাশ্মী সংখ্যানকটি বিষয় থেকে আপনাকে সুরক্ষা করতে সাহায্য করে, যা ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস এবং অন্যান্য ক্ষতিকারক পথী সংক্রমণ থেকে আপনাকে রক্ষা করে।
মোটামুটি এইভাবে আনারসের কিছু উপকারিতা বর্ণনা করা হয়েছে। এটি একটি প্রাকৃতিক উপাদান যা শরীরের প্রতিরোধ সিস্টেমকে সহায়তা করে এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনে সাহায্য করে। তবে, পরামর্শ দেওয়া হয় যে, জরুরি থাকলে সম্পূর্ণ চিকিৎসা ও পরামর্শ নিয়ে কাজ করতে হবে এবং ব্যবহার নির্দেশিত হলেই হবে।
আনারসের জুসের উপকারিতা
আনারসের জুস প্রাকৃতিকভাবে সম্পাদিত একটি পানীয় যা অনেকগুলি উপকারিতা সরবরাহ করে। এই জুস সেবন করার মাধ্যমে আপনি নিম্নলিখিত উপকারিতা পাবেন:
- পুষ্টিকর উপাদানগুলির সরবরাহ: আনারসের জুস প্রাকৃতিকভাবে পুষ্টিকর উপাদানগুলির সম্পূর্ণ সেট সরবরাহ করে। এটি ভিটামিন সি, ম্যাঙ্গনিজ, ভিটামিন বি৬, ফলিক অ্যাসিড, পোটাশিয়াম, ফাইবার এবং অন্যান্য পুষ্টিকর উপাদান সরবরাহ করে যা শরীরের সঠিক পুষ্টি সংক্রান্ত স্বাস্থ্য উন্নতি এবং রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে।
- প্রতিবন্ধী ব্যাক্টেরিয়াল ক্রিয়ার প্রতিরোধ: আনারসের জুস এন্টিব্যাকটেরিয়াল গুণধর্ম ধারণ করে এবং ব্যাক্টেরিয়াল ক্রিয়ার প্রতিরোধ করে। এটি ব্যাক্টেরিয়াল সংক্রমণ সংক্রান্ত সমস্যাগুলি বিষম করতে সাহায্য করে এবং আন্তজ্বার সংক্রান্ত উপকারিতা প্রদান করে।
- এন্টিঅক্সিডেন্ট সম্পূর্ণতা: আনারসের জুস অনেক গুলি প্রাকৃতিক এন্টিঅক্সিডেন্টগুলির উৎস হিসাবে পরিচিত। এটি মহাকাশ্মী সংখ্যানকটি বিষয় থেকে আপনাকে সুরক্ষা করতে সাহায্য করে এবং ক্যান্সার, হৃদরোগ, অস্থি বিটিতে ক্যালসিয়ামের ত্রুটি, আইসির প্রতিস্থাপন, শরীরের জুড়ে মহাকাশ্মী তৈরি করে এবং স্বাস্থ্যকর পুষ্টি বজায় রাখে।
- শরীরে জমা থাকা ক্ষতিকারক তলমান নিরসন: আনারসের জুসের ব্যবহার করা যেতে পারে শরীরে জমা থাকা ক্ষতিকারক তলমান নিরসনে। এটি মহাকাশ্মী সংখ্যানকটি পথী শক্তি নিরাপত্তা প্রদান করে এবং সহায়তা করে শরীরের পরিস্থিতি সমান্য করে এবং এমনভাবে অন্যান্য অসংগঠিত ক্ষতিকারক এলমেন্টগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করে।
- শরীরের জঠর স্বাস্থ্য উন্নতি: আনারসের জুস ব্যবহার করা যেতে পারে শরীরের জঠর স্বাস্থ্য উন্নতি করতে। এটি পেটে গ্যাস, তাপমাত্রা, পাচন সমস্যা এবং কলিক সংক্রান্ত সমস্যাগুলির সহায়তা করতে পারে এবং জঠর প্রতিরোধে মাধ্যমে শরীরের পুষ্টি সংক্রান্ত অন্যান্য উপকারিতা প্রদান করে।
এটি কেবলমাত্র কিছুটা উপকারিতা সম্পর্কে সারসংক্ষেপে একটি বিবরণ ছিল। প্রতিটি ব্যক্তির জীবনযাপনে প্রয়োজনীয় সংখ্যানক বিভিন্ন উপকারিতা ও প্রতিবন্ধী অসুখ সম্পর্কে বিবেচনা করে এবং কিছু কারণ দিয়ে দেয়া হয়েছে।
যদিও আনারসের জুস স্বাস্থ্যকর হতে পারে, তবে মানসিক এবং শারীরিক সমস্যার সম্মুখস্থ থাকলে চিকিৎসা করার জন্য প্রতিষ্ঠানের সাথে পরামর্শ নিয়ে কাজ করতে হবে।
করোনায় আনারসের উপকারিতা
করোনা ভাইরাসের বিস্তারের সময়ে আনারস একটি উপকারিতা সরবরাহ করতে পারে। আনারসের জুসে মহাকাশ্মী অ্যান্টিওক্সিডেন্টগুলির সম্পূর্ণতা থাকে যা আপনার প্রতিরোধ সিস্টেমকে সমর্থন করে।
এটি করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে আপনাকে রক্ষা করতে পারে এবং সংক্রমণের প্রতিরোধে সহায়তা করতে পারে। আনারসের জুসে থাকা এন্টিব্যাকটেরিয়াল গুণধর্ম ভাইরাসের বিস্তার কমাতে সহায়তা করতে পারে এবং শরীরের প্রতিরোধ সিস্টেমকে শক্তিশালী করতে পারে।
এছাড়াও, আনারসের জুস শরীরের জঠর স্বাস্থ্যকে উন্নতি দেয় এবং মজার এন্জাইম কাজ করে যা পাচন প্রক্রিয়ার উন্নতি এবং শরীরের ক্যালসিয়ামের স্তর বজায় রাখতে সহায়তা করে।
সম্পূর্ণতায়, আনারসের জুস প্রতিষ্ঠানের সাথে পরামর্শ নিয়ে কাজ করলে এটি করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে একটি সম্ভাব্য সহায়তা হতে পারে।
আনারস খাওয়ার নিয়ম
আনারস খাওয়ার নিয়মগুলি নিম্নরূপ:
উপযুক্ত আনারস নির্বাচন করুন: সত্যিই আনারসের সমস্ত উপকারিতা পেতে হলে একটি উত্তম মানের আনারস নির্বাচন করা উচিত। আপনি সম্পূর্ণ পরিপক্ক এবং রসপূর্ণ আনারস বেছে নিতে চাইবেন। প্রাকৃতিক আনারস বেশি ভালো হবে যা খালি ও পরিশুদ্ধ।
- স্বাস্থ্যকর পরিমাণ খাওয়া যাক: আনারসের জন্য প্রতিদিন স্বাস্থ্যকর পরিমাণ খাওয়া উচিত। সাধারণত ১ থেকে ২ কাপ আনারস পর্য়ন্ত পর্য়াপ্ত হতে পারে।
- পরিমিত মিষ্টি বা চিনি যোগ করুন: আনারস নিয়মিতভাবে মিষ্টি অথবা চিনি যোগ করা যেতে পারে। তবে মাত্রা পরিমিত রাখতে হবে, কারণ বাড়তি চিনি খাওয়া বা মিষ্টি যোগ করা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
- পরিপক্ক আনারস পরিষ্কার করুন: আনারস খেলে আগে পরিষ্কার করা উচিত। সম্পূর্ণ আনারসের চামচ ব্যবহার করে পরিষ্কার করা যেতে পারে।
- পরিষ্কার পানি দ্বারা পরিষ্কার করুন: আনারস পরিষ্কার করার সময় পরিষ্কার পানি ব্যবহার করা উচিত। পানি দ্বারা ভালোভাবে আনারসের শুঁটকি, কিণ্ডে বা যে কোন ধূলায় অবশিষ্ট পরিষ্কার করা যেতে পারে।
সর্বশেষ, আপনার স্বাস্থ্যকে উপকারী হতে পারে তবে আনারস খাওয়ার আগে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও চিকিৎসার সাথে সামঞ্জস্য করে নিতে অবশ্যই বিবেচনা করতে হবে।
আনারস খেলে কি ক্ষতি হয়
আনারস একটি স্বাস্থ্যকর ফল, তবে কিছু মানসিক এবং শারীরিক সমস্যা থাকতে পারে যার কারণ আনারস খাওয়া সম্পর্কে সতর্ক থাকা উচিত। এই ক্ষতিগুলি নিম্নরূপ:
- এলার্জি প্রতিক্রিয়া: কিছু মানুষের জন্য আনারসের খাওয়ায় এলার্জি প্রতিক্রিয়া হতে পারে। এটি মাংসপেশী ছাড়াও ত্বকে লাল বা তরল বিচ্ছিন্নতা, খিচখিচে চোখ এবং ঘাম ব্যথা, হাঁচি এবং সামান্য সামান্য ব্যথা সহ অন্যান্য উপসর্গ উপস্থাপন করতে পারে।
- পাচনতন্ত্র সমস্যা: কিছু মানুষের জন্য আনারসের খাওয়ায় পাচনতন্ত্রে সমস্যা হতে পারে। এটি পেট ব্যথা, অতিসার, কর্কশ পেট, গ্যাস বা আমাশয়িক সমস্যাগুলির উপসর্গ হতে পারে।
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ: আনারস তালিকা অন্তর্ভুক্ত হলে ডায়াবেটিস রোগীদের উপকারের প্রশ্ন থাকতে পারে। কারণ আনারস মিষ্টি বা সক্ত সার ধারণ করতে পারে যা রক্তে গ্লুকোজের স্তরে বৃদ্ধি করতে পারে। ডায়াবেটিস রোগীরা আনারসের খাওয়াকে পরিসীমিত রাখতে হবে এবং ডক্টরের পরামর্শ মেনে চলতে হবে।
- অতিরিক্ত স্যালিসিলেট অ্যাসিড: আনারসে স্যালিসিলেট অ্যাসিড থাকতে পারে, যা কিছু মানুষের জন্য সমস্যা হতে পারে। এটি আপনার কাপোয়েড় করতে পারে, জ্বর এবং অতিরিক্ত অ্যাসিডিটি হতে পারে। স্যালিসিলেট অ্যাসিডের ক্ষেত্রে মাত্রা সঠিকভাবে পরিচালনা করা উচিত এবং পরামর্শ অনুসরণ করা উচিত।
- নারীর গর্ভপাত ঝুঁকি: আনারসের কারণে মহিলাদের গর্ভপাত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। গর্ভাবস্থায় মহিলাদের আনারস খাওয়া নিষেধ। তবে আপনি চাইলে গর্ভাবস্থার পরে আনারস খেতে পারেন, কিন্তু আপনাকে শরীরের অবস্থা বুঝতে হবে এবং ডাক্তারের পরামর্শের পর এটি খেতে হবে।
- বাতের ব্যথা হওয়ার ঝুঁকি: যখন আপনি আনারস খান, তখন এটি আপনার গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ট্র্যাক্টে পৌঁছানোর পর অ্যালকোহলে পরিণত হয়। আর এর ফলে মানবদেহে বাতের ব্যথা হতে পারে।তাই যাদের বাতের ব্যথা আছে বা সন্দেহ হয় যে এটি বাত হতে পারে তাদের জন্য আনারস না খাওয়াই ভালো।
- 3. রক্তে চিনির পরিমাণ বৃদ্ধি পায়: আনারসে রয়েছে প্রচুর প্রাকৃতিক চিনি। আনারসের দুটি চিনির উপাদান হল সুক্রোজ এবং ফ্রুকটোজ যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ক্ষতিকর। কিন্তু শরীরের ক্ষতি, এটা খাওয়ার উপর নির্ভর করে। আর আনারসে থাকা অতিরিক্ত চিনি আমাদের শরীরে রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়ায়। তাই সপ্তাহে ২ দিনের বেশি আনারস না খাওয়াই ভালো।
- ওষুধের প্রতিক্রিয়া: আনারসে ব্রোমেলেন থাকে যা ওষুধ তৈরিতে ব্যবহৃত হয় এবং যে কোন রোগীর প্রয়োজন হলে দেওয়া হয়। তাছাড়া, আপনি যদি কোনো কারণে অ্যান্টিবায়োটিক এবং অ্যান্টিকনভালসেন্ট ব্যবহার করেন, ডাক্তাররা আপনাকে আনারস খেতে নিষেধ করেন। কারণ এটি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে।
- কাঁচা আনারসে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া: অনেকে কাঁচা আনারস ব্যবহার করেন জুস বানানোর জন্য কিন্তু এটি শরীরের জন্য ক্ষতিকর এবং খুবই বিষাক্ত। এবং মাঝে মাঝে কাঁচা আনারস খেলে বমির প্রবণতা দেখা দেয়।
- রক্ত তরলিকরন: রক্ত পাতলা করার জন্য যেসব ওষুধ তৈরি করা হয় তাতে আনারস ব্যবহার করা হয়। এই ফল শরীরে রক্ত জমাট বাঁধতে বাধা প্রদান করে।
- মুখ ও গলার জন্য ক্ষতিকর: কাঁচা আনারসে প্রচুর পরিমাণে এসিডিটি থাকে যা আমাদের মুখ ও গলার ভেতরে শ্লেষ্মা তৈরি করে।এই ফল খাওয়ার পর অনেক সময় অনেকের পেটে ব্যথা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
এইগুলি হল কয়েকটি সম্ভাব্য ক্ষতি, কিন্তু সাধারণত আনারস স্বাস্থ্যকর এবং সহজলভ্য ফল হিসাবে পরিচিত। তবে, আপনি যদি যে কোন নির্দিষ্ট সমস্যা বা স্বাস্থ্য অবস্থায় থাকেন, তবে প্রথমে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন।
আনারস খাওয়ার সঠিক সময়
সকালে খালি পেটে এক গ্লাস পানি এবং আনারস ফল বা আনারসের জুস খাওয়া ভাল। কারণ সকালে আমাদের মেটাবলিজম বেশি হয়। এই সময়ে আমাদের পাচনতন্ত্র দ্রুত শর্করা ভেঙে দেয় যা আমাদের শরীরকে প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুলি দ্রুত শোষণ করতে সাহায্য করে।
এটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সরবরাহ করে যা শরীরকে বিভিন্ন সংক্রমণ, মুক্ত মৌল, প্রদাহ ইত্যাদি থেকে রক্ষা করে। এ কারণেই ফলকে শক্তির ‘পাওয়ার হাউস’ও বলা হয়। আপনি যদি নিয়মিত ব্যায়াম করেন, ব্যায়াম শুরুর আগে এবং পরে আনারস খাওয়া ভালো।
রাতে বা ঘুমানোর ঠিক আগে আনারস খাওয়া আপনার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। এটি রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়াতে পারে এবং ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রধান খাবার এবং ফল খাওয়ার মধ্যে অন্তত ত্রিশ মিনিটের ব্যবধান রাখুন। খাওয়ার ঠিক আগে বা পরে আনারস খাওয়া হজমের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এর কারণ হল ফাইবারের পরিমাণ বেশি এবং ফাইবার হজম হতে সময় লাগে।
প্রধান খাবারের সাথে আনারস খাওয়া ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য বেশি ক্ষতির কারণ হতে পারে। কারণ এটি রক্তে চিনির পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে পারে। ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে আনারস এবং খাবারের মধ্যে কমপক্ষে দুই ঘণ্টার ব্যবধান থাকতে হবে।
দুধ এবং আনারস একসাথে খেলে কি হয় ?
দুধকে আদর্শ খাদ্য বলা হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, দুধই একমাত্র তরল খাদ্য, যেখানে প্রায় সব ধরনের পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান। দুধ প্রোটিন, চর্বি এবং কার্বোহাইড্রেটের একটি দুর্দান্ত ‘মিশ্রণ’। তাই দুধ যেকোন বয়সের মানুষের জন্য উপকারী।
অন্যদিকে, আনারস ভিটামিন সি সমৃদ্ধ। এটি ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম এবং ফসফরাসেরও একটি বড় উৎস। যেহেতু দেশে প্রচুর চাষ হয়, তাই আনারস গ্রাম থেকে শহরে সহজেই পাওয়া যায়।
কিন্তু যখন এই দুটি খাবার একসাথে পেটে যায়, তখন কি রেসলিং ট্যাগ টিম এর মতো যৌথ প্রচেষ্টায় আমাদের নাকাল করতে উদ্যোগী হয় ? বিজ্ঞান এই বিষয়ে কি বলে? বারডেমের প্রাক্তন প্রধান পুষ্টিবিদ আখতারুন নাহার আলো বলেন: “দুধ এবং আনারস একসাথে খেলে মানুষ মারা যায় এমন বলার কোন বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। এটি নিতান্তই একটি খুব সাধারণ কুসংস্কার।”
যুক্তি হিসেবে তিনি কাস্টার্ডের কথা বলেছেন। এতে অন্যান্য ফল এবং দুধের সাথে আনারস রয়েছে। আইসক্রিম বা মিল্কশেকের মধ্যে আনারসের সঙ্গে দুধও ব্যবহার করা হয়। এসব খাবার খেয়ে মৃত্যু তো দূরের কথা, ছোটখাটো সমস্যা নিয়েও কাউকে অভিযোগ করতে শোনা যায় না।
আনারসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার। এ কারণেই আনারস খেলে অনেকেরই অ্যাসিডিটির সমস্যা হয়। অন্যদিকে অনেকে দুধ হজম করতে পারে না। ফলে বদহজম বা পেট খারাপ হয়। দুধে ল্যাকটোজেন নামক উপাদান থাকে।
অনেকের পেটে এই ল্যাকটোজেন সহ্য হয় না। চিকিৎসা ভাষায় একে বলা হয় ল্যাকটোজেন অসহিষ্ণুতা।
এর মানে হল যে দুধ এবং আনারস একসাথে খেলেও এই সমস্যাগুলি তৈরি হয় না। আমাদের কিছু শারীরিক সমস্যা বা সীমাবদ্ধতার কারণে সমস্যা দেখা দেয়।
তাহলে মৃত্যুর মতো ভুল ধারণা কিভাবে এল? প্রশ্নের উত্তরে পুষ্টিবিদ আখতারুন নাহার আলো একটি লোককথা বলেছেন। আনারস সাধারণত ঝোপঝাড়ে পাওয়া যায়।
আর ঝোপ মানে সাপের আনাগোনা। প্রচলিত আছে যে একবার একটি বিষাক্ত সাপ একটি আনারসের ঝোপে ছিলো। কোনো ভাবে সাপটি আনারসের উপর বিষ ঢেলে দিয়েছিলো। তারপর এক ব্যক্তি সেই বিষাক্ত আনারস খেয়ে ফেলল। তার পরপরই তিনি এক গ্লাস দুধ পান করলেন।
কিছুক্ষণ পর, তিনি মারা যান। ফলস্বরূপ, লোকেরা ধরে নিয়েছিল যে আনারসের পরে দুধ পান করে সে তার জীবন হারিয়েছে, এবং তারপর থেকে কুসংস্কার ছড়িয়ে পড়ে যে সে একসঙ্গে আনারস এবং দুধ খেয়ে মারা গেছে।
আনারস সংরক্ষণের উপায়
খোসা ছাড়ানো ফল দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করা যেতে পারে। রেফ্রিজারেটরে – দুই সপ্তাহ পর্যন্ত, শ্বাসের জন্য ছিদ্র দিয়ে কাগজে মোড়ানো
কাঁচা ফল এক সপ্তাহ পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যেতে পারে। আপনাকে কেবল কয়েক সেন্টিমিটার রেখে পাতা কেটে ফেলতে হবে এবং এটি উল্টাতে হবে
টুকরো টুকরো করা ফল বা পুরোপুরি খোসা ছাড়ানো অবশ্যই ক্লিং ফিল্ম বা ব্যাগে মোড়ানো উচিত, আপনি একসঙ্গে একটি প্লেট দিয়ে ফ্রিজে রাখতে পারেন। সেখানে এটি তিন দিনের বেশি সংরক্ষণ করা যাবে না।
পুষ্টিসাধন সহ দেহকে সুস্থ রাখতে আনারস একটি অতুলনীয় ও কার্যকরী ফল। এটি দামেও সস্তা এবং সহজলভ্য। এছাড়া এর বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় যে কোন একটি ফল থাকলে মন্দ হয়না। তাই চাইলেই প্রতিদিনের খাবারে আনারস রাখা যেতেই পারে।