দোকানে রসগোল্লা ছাড়া আরও নানা রকমের মিষ্টি পাওয়া যায়। তবে কমন হলো সাদা মিষ্টি আর কালো মিষ্টি। সাদা মিষ্টি আসলে ছানা দিয়ে তৈরি করা হয়। তবে এই মিষ্টি বানাতে হলে আগে ছানা তৈরি করা সিখতে হবে। আর ছানা ভালো না হলে পুর মিষ্টি খারাপ হয়ে যাবে। মিষ্টি যারা পছন্দ করেন সাদা মিষ্টি তাদের কাছে খুব প্রিয়। এই মিষ্টি তৈরি করা কিন্তু খুব কঠিন কাজ নয়। আজ আপনাদের সামনে হাজির করছি সাদা মিষ্টির রেসিপি।
উপকরণ : ছানার জন্য – ১ লিটার দুধ, চিনি – ১ চা চামচ, ময়দা – ১/৪ কাপের (১ কাপের ৪ ভাগের এক ভাগ ) সামান্য কম বা ওই কাপের গলা পর্যন্ত, বেকিং সোডা – আধা চিমটি
সিরার জন্য : চিনি – ২ কাপ, পানি – ১ কাপ + ৩/৪ কাপ ( ১ কাপের ৪ ভাগের ৩ ভাগ ), ২ টি এলাচের বিচির গুড়া ( অপশনাল)
প্রণালী : প্রথমে চিনি ও পানি একটা ছড়ানো কিন্তু গভীর তলার পাতিলে নিয়ে নেড়ে নেড়ে জ্বাল দিয়ে সিরা তৈরি করুন । এই সিরাটা এমন হবে যে তর্জনি আঙ্গুল আর বুড়ো আঙ্গুলে সিরা নিয়ে আঙ্গুল সরিয়ে নিলে আঙ্গুলে পাতলা সিরার আবরণ হয়ে থাকবে । ছানা হাতের তালুতে ভালো করে ঘষে ঘষে মসৃন করে ১০-১৫ মিনিট মাখুন । হাতে ছানা থেকে তেল বের হয়ে আসলে আর মাখার দরকার নাই ।
এবার ময়দায় বেকিং সোডা দিয়ে ভালো করে মেশান । এখন এই ময়দার মিক্স ও ১ চা চামচ চিনি দিয়ে মসৃন করে মাখানো ছানায় ভালো করে মেশান । এবার এই ছানার মিশ্রন দিয়ে ১০-১২ টি ফাটা বিহীন মসৃণ বল তৈরি করুন । এলাচ বিচির গুড়া দিতে চাইলে বলের ভেতর অল্প করে দিয়ে বল তৈরি করুন । প্রয়োজনে সামান্য ঘি হাতে নিয়ে বল তৈরি করুন । এতে বল মসৃণ হবে ।
বল গুলো বলক তোলা সিরাতে ছেড়ে দিন । জ্বাল কম থাকতে পারে বা একটু বেশী থাকতে পারে তবে খেয়াল রাখুন যেনো সিরার বলক থাকবে ও বলক এর ফেনা গুলো মিষ্টি গুলোকে ঢেকে রাখবে । ঢাকনা দিবেন না । মিষ্টি আস্তে আস্তে ফুলতে থাকবে । হাল্কা করে নেড়ে মিষ্টি গুলো মাঝামাঝি রাখার চেষ্টা করবেন । ৫ মিনিট পর বা মিষ্টি ডাবল পরিমানে ফুলে উঠলে এক কাপ ফুটানো গরম পানি দিন । ১০ মিনিট পর মিষ্টি উল্টে দিন ও আধা কাপ ফুটানো গরম পানি দিন ।
সিরাটা বেশী ঘন না হয় এর জন্য প্রয়োজন হলে আবারও গরম পানি আধা কাপের মতো বা তার বেশী পানি ঢালুন। মিষ্টি হতে ১৫-২০ মিনিট লাগবে । ১৫ মিনিট পরে ১ টা মিষ্টি তুলে মাঝে ভাগ করে যদি দেখেন হয়ে গেছে তাহলে নামিয়ে ফেলুন । তবে নামানোর আগে সিরা যেনো ঘন না হয় নরমাল (স্পনজ না) রসগোল্লার যেমন সিরা হয় তেমন হবে । সামান্য ঘন কিন্তু আঠালো হবে না । চুলা থেকে নামিয়ে ঢাকনা দিয়ে পাতিলের মিষ্টি ঠান্ডা হতে দিন । ২-৩ ঘন্টা বা একটু বেশী সময় পর সার্ভ করুন ।
আরো দেখুন: ফিরনি রেসিপি ও প্রয়োজনীয় টিপস
ছানা তৈরী
উপকরণ : লিকুইড দুধ – ১ লিটার, সিরকা / ছেকে নেয়া লেবুর রস / ছানার পানি (পুরোনো) – সিরকা ও লেবুর রস ২-৩ টেবিল চামচ সম পরিমান পানি দিয়ে মিশানো ( লম্বা বড় লেবুর রস কখনো বেশীও লাগতে পারে কারন সব লেবুতেই পর্যাপ্ত টক ভাব নাও থাকতে পারে ) আর পুরোনো ছানার পানি যত লাগে ততটুকুই দিবেন । আধা কাপ করে একবারে ঢেলে ঢেলে ।
প্রণালী : ১ লিটার লিকুইড দুধ নেড়ে নেড়ে জ্বাল দিন এবং বলক উঠলে নামিয়ে রাখুন । ৫-১০ মিনিট পর আধা চা চামচ করে করে সিরকা / লেবুর রস দিয়ে আস্তে করে নাড়ুন । যখন সবুজ পানি বের হবে তখন আর সিরকা দিতে হবে না । তবে যদি আরো লাগে তাহলে সবুজ পানি আসা পর্যন্ত আরও দিন । দুধ কিন্তু আর চুলায় দিবেন না । ছানা হলে ১৫-২০ মিনিট পর ছানা ছেকে নিন
একটা পাতলা নরম সুতি কাপড় যেটাতে রং উঠার সম্ভাবনা নাই সেটা একটা ঝাঝরির উপর নিয়ে নিচে একটা পাতিল রেখে ছানার পানি ঝরান । এই পানিটা ১ লিটার বোতলে রেখে ফ্রিজে রেখে দিতে পারেন । পরের বার এটা দিয়ে ছানা বানাতে পারবেন । ছানার উপর কলের পানি ছেড়ে হাত দিয়ে নেড়ে নেড়ে ধুয়ে নিন । তারপর পানি চেপে ফেলুন । এভাবে দুইবার করলে সিরকার বা লেবুর গন্ধ থাকবে না । এবার ছানা সহ কাপড় উঠিয়ে হাত দিয়ে চেপে চেপে পানি ঝরিয়ে নিন । তবে এমন চাপ দিবেন না যাতে ছানা বের হয়ে আসে । এরপর কাপড়টি ছানা সহ পোটলা বেধে নরমাল বাতাস প্রবাহিত হয় এমন জায়গায় ঝুলিয়ে দিন । ১ ঘন্টার জন্য জন্য ঝুলিয়ে রাখুন । আমি বারান্দাতে ঝুলিয়ে রাখি এতে বার বার পানি চিপতে হয় না ও সুন্দর পানি ঝরে যায় । ১ ঘন্টা পর হাত দিয়ে চেপে বাড়তি পানি বের করে ছানা বের করে নিন ।
ছানা থেকে কিছুটা ছানা এক হাতের তালুতে নিয়ে আরেক হাতের আঙ্গুল দিয়ে ৩-৪ সেকেন্ড ঘষে যদি একটা বল বানাতে পারেন তাহলে বুঝবেন ছানা মিষ্টি বানানোর জন্য রেডি । আর যদি হাতের সাথে লেগে যেতে চায় বুঝবেন আরো পানি ঝরবে । সেক্ষেত্রে ফ্যানের বাতাসের নিচে হাত দিয়ে নেড়ে নেড়ে আধা ঘন্টা রাখুন ( হাত দিয়ে বার বার না নাড়লে ছানা শুকনা হয়ে যাবে ) । খেয়াল রাখুন ছানা যেনো সফট থাকে । ছানা বেশী শুকনা মনে হলে আধা বা ১ চা চামচ পানি দিয়ে মাখিয়ে নিতে পারেন ।
Source: bdsongsar.com