স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটের প্রতিবেদন অবলম্বনে জানানো হল পুদিনা পাতার গুণাগুণ সম্পর্কে বিস্তারিত।ভারতের ‘আরব্রো ফার্মাসিউটিকাল’য়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৌরভ অরোরা বলেন, “পুদিনা পাতায় পাওয়া যায় ‘পলিফেনল’ যা একে ঔষধি গুণ দেয়। হাঁপানি, পেটের গোলমাল সারাতে তাই পুদিনা পাতা বিশেষ উপকারী।”অপরদিকে এর ক্যালরি, প্রোটিন, চর্বি সবকিছুরই মাত্রা কম। ভিটামিন এ, সি আর বি – কমপ্লেক্স মেলে পুদিনা পাতা থেকে, যা ত্বকের যত্নে আর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে অত্যন্ত জরুরি উপাদান। এছাড়াও এই পাতায় মেলে লৌহ, পটাসিয়াম এবং ম্যাঙ্গানিজ। এই খনিজ উপাদানগুলো রক্তে ‘হিমোগ্লোবিন’য়ের মাত্রা বাড়ায় এবং মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা অটুট রাখে।
হজমে সহায়ক
অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট’, ‘মেন্থল’ আর ‘ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট’য়ের প্রাচুর্য থাকে পুদিনা পাতায়। এই উপাদানগুলো হজমের জন্য প্রয়োজনীয় ‘এনজাইম’ তৈরি করে। পুদিনা পাতার ‘এসেন্সিয়াল অয়েল’য়ের আছে শক্তিশালী জীবাণুনাশক ক্ষমতা। পাশাপাশি তা পাকস্থলিকে শীতল করে, অম্লীয় খাবার সামাল দিতে সাহায্য করে। ফলে পেটের গোলমাল কমে।
হাঁপানি কমায়
নিয়মিত পুদিনা পাতা খাওয়ার অভ্যাস করতে পারলে বুকে কফ জমতে পারেনা। এখানে মুখ্য ভূমিকা থাকে ‘মেন্থল’য়ের, যা ফুসফুসে আটকে যাওয়া ‘মিউকাস’ ছাড়ায়। এছাড়াও নাকের ফুলে ওঠা ‘মেমব্রেন’কে সারিয়ে তোলে ‘মেন্থল’। ফলে শ্বাস নেওয়ার কষ্ট দূর হয়। তবে অতিরিক্ত খাওয়া ঠিক নয়, নতুবা শ্বাসনালীতে অস্বস্তি দেখা দিতে পারে।
মাথা ব্যথা সারায়
পুদিনা পাতায় থাকা ‘মেন্থল’ পেশিকে শিথিল করার মাধ্যমে ব্যথা কমায়। এই পাতার নির্যাস থেকে তৈরি অসংখ্য মলম মাথা ব্যথা সারাতে ব্যবহার হয়। মলম ব্যবহার করতে না চাইতে সরাসরি পুদিনা পাতার রস কপালে মাখলেও মাথা ব্যথা কমে।
মানসিক স্বস্তি
সুগন্ধিভিত্তিক চিকিৎসায় পুদিনা পাতা প্রথম সারির উপাদান। এর কড়া সুগন্ধ মানসিক চাপ, হতাশা দূর করে শরীরকে চনমনে করে তোলে। রক্তে ‘কর্টিসল’ হরমোনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে জৈবিক মানসিক চাপ সামাল দেওয়ার ক্ষমতাকে সক্রিয় করার মাধ্যমে এই কাজটি হয়। আবার পুদিনা পাতার ‘এসেন্সিয়াল অয়েল’য়ে ঘ্রাণ তাৎক্ষণিক রক্তে ‘সেরোটনিন’ হরমোন নিঃসরণ করে। এই হরমোনও মানসিক অস্থিরতা ও হতাশা কমায়।
ত্বকের যত্নে
প্রদাহ ও ব্যাকটেরিয়ানাশক গুণ থাকার কারণে ত্বকের ব্রণের সমস্যা সারাতে পুদিনা পাতার জুড়ি নেই। এই পাতার উচ্চমাত্রায় ‘স্যালিসাইলিক অ্যাসিড’ থাকে যা ব্রণ দূর করে। ত্বক পরিষ্কার করতেও এটি বেশ কার্যকর। মৃত কোষ দূর করতে এবং কড়া পড়া অংশ স্বাভাবিক করতেও পুদিনা পাতা ভালো কাজ দেয়।
দাঁত ও মাঢ়ির সুরক্ষায়
মুখের দুর্গন্ধ দূর করার কাজে পুদিনা পাতা আদর্শ উপাদান। এর নির্যাস সমৃদ্ধ ‘মাউথওয়াশ’ মুখের ভেতরের জীবাণু ধ্বংস করে, সুস্থ রাখে দাঁত ও মাঢ়ি।
আরো দেখুন: ক্যাস্টর অয়েলের উপকারিতা
স্মৃতিশক্তি বাড়ায়
মস্তিষ্কের জ্ঞানীয় ক্ষমতা বাড়াতে পুদিনা পাতার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে বলে দাবি করেন বিশেষজ্ঞরা। নিয়মিত খেলে বাড়ে উপস্থিত বুদ্ধি, সতর্কতা, স্মৃতিশক্তি।
ওজন সামাল দিতে
পুদিনা পাতা থেকে তৈরি ‘এসেন্সিয়াল অয়েল’ হজম ক্ষমতাকে এবং বর্জ্য অপসারণ প্রক্রিয়াকে সচল রাখতে সহায়তা করে। পক্ষান্তরে তা খাবার থেকে পুষ্টি গ্রহণে সহায়ক হয়। ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণ এবং পুষ্টির চাহিদা পূরণ হয়।
মৌসুমি রোগের চিকিৎসায়
ঠাণ্ডা, সর্দিজ্বর, নাক বন্ধ ইত্যাদি সমস্যার সমাধানে পুদিনা পাতা অত্যন্ত উপকারী এবং কার্যকর। প্রায় সকল ‘ভেপর রাব’, ‘ইনহেলার’য়েই থাকে এর নির্যাস। পাশাপাশি কাশি কমাতে এবং গলার অস্বস্তি সারাতেও পুদিনা পাতা কার্যকর।
Source: https://bangla.bdnews24.com/lifestyle/article1864029.bdnews