কমবেশি বারো মাসই বাজারে থাকে বেগুন। তবে বেগুন যখন বেগুনি হয়ে ইফতারে শামিল হয়, তখন তার কদর যেমন বাড়ে, দামও তেমন বাড়ে। তবে শুধু বেগুনি কেন? ভর্তা, ভাজি, ঝোলেও বেগুন জনপ্রিয়।
শুধু স্বাদের কারণে নয়, বেগুন শরীরের পুষ্টি পূরণের প্রয়োজনীয় সবজি হিসেবে বিবেচিত। ঢাকার বারডেম জেনারেল হাসপাতালের জ্যেষ্ঠ পুষ্টিবিদ শামছুন্নাহার নাহিদ বলেন, ‘একদিকে বেগুন খেতে ভালো, অন্যদিকে প্রোটিন, ভিটামিন, খনিজে পূর্ণ। আছে খানিকটা কার্বোহাইড্রেট আর প্রচুর জলীয় অংশ। তাই যারা ওজন কমাতে চায়, তাদের জন্যও বেগুন খুব ভালো সবজি। তবে যাদের গেঁটে বাত আছে, কিংবা অ্যাজমা ও অ্যালার্জি থাকে, তাদের বেলায় বেগুনে খানিকটা বিধিনিষেধ আছে।’ বেগুনে বেশি গুণ কীভাবে হলো, সেটা জেনে নেওয়া যাক।
বেগুনে থাকে প্রচুর ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম। এই উপাদানগুলো দাঁত, হাড়ের জন্য খুব উপকারী। ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম দাঁতের গঠনকে দৃঢ় করে ও মাড়িকে শক্তিশালী করে। হাড়ের গঠন ও বৃদ্ধিতেও বিশেষ ভূমিকা রাখে।
বেগুন ভিটামিন এ সমৃদ্ধ। বেগুনে থাকা ভিটামিন ‘এ’ চোখের জন্য খুব উপকারী। এটি চোখের যাবতীয় রোগের বিরুদ্ধে লড়ে এবং দৃষ্টিশক্তির প্রখরতা বাড়ায়।
যারা নিয়মিত বেগুন খায়, তাদের ক্যানসার হওয়ার আশঙ্কা অন্যদের তুলনায় কম। বেগুনে আছে ক্যানসার প্রতিরোধক উপাদান। পাকস্থলী, ক্ষুদ্রান্ত্র, বৃহদন্ত্রের ক্যানসারকে প্রতিরোধ করার এক অসাধারণ ক্ষমতা আছে বেগুনের।
বেগুনে আছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ‘ই’ এবং ‘কে’। এটি শরীরের ভেতর রক্ত জমাট বাঁধতে বাধা দেয়। ফলে রক্ত চলাচল কার্যক্রমকে সচল রাখে।
ডায়রিয়া হলে শরীরে জিংকের ঘাটতি দেখা দেয়। জিংকের ঘাটতি দূর করার সবচেয়ে ভালো সবজিগুলোর একটি বেগুন। তবে ডায়রিয়া চলাকালীন বেগুন নয়। ডায়রিয়া ভালো হয়ে গেলে বেগুন খেয়ে পূরণ করতে পারেন জিংকের ঘাটতি।
বেগুনে থাকে আয়রন। এই আয়রন শরীরে রক্তের পরিমাণ বাড়াতে সহায়তা করে। তাই রক্তশূন্যতায় ভোগা রোগীরা খেতে পারে বেগুন। পুষ্টি পূরণ হবে, রক্ত স্বল্পতাও দূর হবে।
আরো দেখুন: পেপের উপকারিতা
মুখ ও ঠোঁটের কোণে কিংবা জিবে ঘা হয় অনেকের। এটি সাধারণত রিবোফ্ল্যাবিনের অভাবে হয়ে থাকে। বেগুনে থাকে প্রচুর রিবোফ্ল্যাবিন। নিয়মিত বেগুন খেলে এ সমস্যা এড়ানো যায়।
জ্বর হওয়ার পর মুখের বিস্বাদও দূর করে বেগুন। তাই জ্বরের পর বেগুনের তরকারি খেলে মুখের স্বাদ ফিরে পাওয়া যেতে পারে।
বেগুনে আছে প্রচুর পরিমাণ ডায়াটারি ফাইবার বা আঁশ। এটি খাবার হজমে সাহায্য করে এবং কোষ্ঠ্যকাঠিন্য দূর করতে বেগুনের আছে বিশেষ ভূমিকা।
যাদের রক্তে খারাপ ধরনের কোলেস্টেরলের পরিমাণ বেশি, তাদের জন্য বেগুন ভালো সবজি। বেগুন ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সক্ষম।
Source: prothomalo.com