সকালে ঘুম থেকে উঠেই প্রথম চিন্তা ,চার – চারটি বেলায় সবার জন্য কি কি রাঁধবো | কখনো সখনো আগের দিনে ও কিছু টা চিন্তা সেরে রাখি | আজ সকালে তরকারী ঝুড়িতে দেখি কয়েকটা কচি কচি একেবারে সবুজ উচ্ছে | চিন্তা করলাম আজ দুপুরে খুব মুখরোচক আর মুচমুচে করে আলু আর উচ্ছে একসঙ্গে ভাজবো | প্রথম পাতের শুরুটা মনে হয় ভালোই হবে | আর শুরুটা ভালো হলে তো শেষ পর্যন্ত ভালো হবেই |
আমাদের দৈনন্দিন জীবনে আমরা অনেক অনেক রকমের শাক-সবজি খাদ্য তালিকায় রেখে থাকি | উচ্ছে এমন এক সবজি যা আমাদের ছোট থেকে বড়ো সবার শরীরের জন্য ভীষণ ভীষণ উপকারী | আমাদের খাবার টেবিলে তো মাঝে মধ্যেই উচ্ছের কোনো একটা মেনু রাখা অবশ্যই উচিত | আর তাই আমি ও মাঝে মাঝেই উচ্ছের কোনো না কোনো মেনু দুপুরের মেনুতে রেঁধেই থাকি | আজকে রাঁধছি উচ্ছে -আলু ভাজা |
সবুজ সবজি উচ্ছে নানা খাদ্যগুণে ভরপুর | রক্ত কে পরিশ্রুত করতে ,লিভার ভালো রাখতে , পেট ভালো রাখতে ,মুখের স্বাদ বাড়াতে ,আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথা রক্তে ইনসুলিনের পরিমান নিয়ন্ত্রণে এর ভূমিকা অসীম |তাই ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উচ্ছে কেবলমাত্র ভীষণ উপকারী এক সবুজ সবজিই নয় ……এক মহৌষধ ||
আজ ছুটির দিন | আর সকালের জলখাবারটাও বেশ মজাদার হয়েছে | সব্বাই খুশি খুশি | এবার তৈরি করবো দুপুরের মেনু | কিন্তু মুচমুচে – মুখরোচক – উচ্ছে – আলু ভাজবো সব রান্নার শেষে | গরম গরম ভাত আর গরম গরম আলু – উচ্ছে ভাজা | খাওয়ার শুরুটা একেবারে দারুন …………দারুন হবে |
আরোও পড়ুন: দই পটল রেসিপি
উপকরণ :-
-
উচ্ছে – ২৫০ গ্রাম ( ছোট ছোট টুকরো করে কুচানো )
-
আলু – ৪টি মাঝারি সাইজের ( খোসা ছাড়িয়ে ছোট ছোট টুকরো করে কাটা )
-
রসুন – ১২-১৪টা কোয়া ( খোসা ছাড়িয়ে কুচানো )
-
লাল রঙের কাঁচালঙ্কা বা লাল শুকনোলঙ্কা – ৪-৫টা ( ছোট ছোট টুকরো করে কাটা )
-
পাঁচফোড়ন – ১/২ চামচ
-
হলুদ – ১/২ – ১ চামচ
-
নুন – প্রয়োজনমতো
-
চিনি – প্রয়োজনমতো
-
সর্ষের তেল – প্রয়োজনমতো
পদ্ধতি :-
সব রান্না শেষ করে ফেলেছি | বাকি ”মুচমুচে আর মুখরোচক উচ্ছে – আলু ভাজা” | ভাজা শুরুর আগে কুচানো আলু ,কুচানো উচ্ছে ভালো করে ধুয়ে জল ঝরিয়ে নিলাম | গ্যাসে কড়াই চাপলাম | দিলাম প্রয়োজনমতো তেল | তেল বেশ গরম হয়ে উঠলেই কুচানো উচ্ছে গুলো কড়াইতে দিলাম | দিলাম এক চিমটে হলুদ ,এক চিমটে নুন , এক চিমটে চিনি| আঁচ বাড়িয়ে কমিয়ে কুচানো উচ্ছে মুচমুচে করে ভেজে তুলে রাখলাম |
এবার কড়াইয়ের ওই তেলের মধ্যেই প্রয়োজন মতো আর একটু তেল দিলাম | তেল গরম হতেই দিলাম পাঁচফোড়ন ,কুচানো রসুন ,কুচানো লাল কাঁচালংকার টুকরোগুলো | আঁচ কমিয়ে একটু নেড়েচেড়ে নিয়ে ,আঁচ বাড়িয়ে দিলাম আলুর কুচানো টুকরোগুলো | আঁচ বাড়িয়ে নাড়তে নাড়তে দিলাম হলুদগুঁড়ো ,নুন আর সামান্য চিনি | আঁচ বাড়িয়ে কমিয়ে আলু বেশ মুচমুচে করে ভাজা হয়ে গেলে ,মিশিয়ে দিলাম মুচমুচে করে ভাজা উচ্ছের টুকরোগুলো |সব ভালো করে মিশিয়ে নিতে লাগলাম |
উচ্ছে – আলু ভাজার স্বাদ দেখে নিলাম | বাঃ !…… বেশ টেস্টি টেস্টি আর মুখরোচক হয়েছে তো | আমার মনের মতোই হয়েছে |
সবার ভালো তো লাগবেই | এবার যথারীতি খাওয়ার সময় হতেই সবাই খাবার টেবিলে চলে এলো | খাওয়া শুরু হলো গরম ভাত আর সঙ্গে গরম গরম মুখরোচক উচ্ছে – আলু ভাজা | খাবার মুখে দিতেই সবাই একসঙ্গেই বলে উঠলো ……..ও – হো – হো ! কি দারুন ! কি দারুন !……..খেতে কি ভালোই না হয়েছে ,তাই না ?……খুব স্বাদের ,খুবই স্বাদের ……..মন ভরে গেলো | সবার এই আলোচনা শুনতে শুনতে মনটা কেমন খুশিতে ভরে ভরে যাচ্ছিলো | সবাইকে খাবার পরিবেশন করে ,আমি ও তাড়াতাড়ি গরম ভাত আর গরম গরম উচ্ছে – আলু ভাজা দিয়ে খাওয়া শুরু করে দিলাম ……………….বাহঃ!….বাহঃ ! সত্যিই তো দারুন ! দারুন ! লাগছে ………|
খুব আনন্দ করে আপনারা ও সব্বাই ভালো খান ,থাকুন সুস্থ আর অনেক অনেক আনন্দে আনন্দিত |