খিরা খাওয়ার উপকারিতা

শশা আমাদের দেশে এক গুরুত্বপূর্ণ সব্জি ও ফল। শশা চাষের জন্য পানি জমে না এরকম উঁচু মাটি নির্বাচন করতে হবে। দোঁয়াশ মাটিতে এর চাষ ভাল হয়। জৈবিক সার প্রয়োগ করে এঁটেল মাটিতেও শশা চাষ করা যায়। অবশ্য মাটিতে পানি নিস্কাশন ব্যবস্থা ভাল ভাবে থাকা দরকার।

দেশের কৃষিবিদ ও কৃষি বিশেষজ্ঞরা উচ্চফলনশীল ক’জাতের শশাকে অনুমোদন করেছেন। সেগুলো হল-চাইনীজ গ্রীণ, পুচা সংযোগ, পইনসেটী, এ এইউসি ১, এএইউসি ২, এএইউসি ৩ এবং এএইউসি ৪। এছাড়াও বাজারে অনেক উচ্চফলনশীল এবং হাইব্রীড জাতের শশা পাওয়া যায়।

শীতের শেষ থেকেই বর্ষাকালীন শশার বীজ বপন করা যায়, অবশ্য মার্চ-এপ্রিল পর্যন্ত বীজ বপন করা চলে। শশার চাষের জন্য বিঘা প্রতি ৩০০ গ্রাম বীজের প্রয়োজন। বীজ সাধারণত সারিতে বুনতে হয়। সারি থেকে সারির দূরত্ব হবে ৪ ফুট। সাধারণত শশার বীজ মাদায় বপন করা হয়। এর জন্য প্রথমে উঁচু ভিটা সারি সারি ভাবে তৈরি করে নিতে হয়। প্রত্যেক ভিটাতে মাদা থেকে মাদার দূরত্ব হবে ৩ ফুট। প্রত্যেকটি মাদায় ২-৩টি বীজ বপন করতে হয়। মাটি প্রস্তু‘তির সময়েই পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা করে রাখতে হবে।
শশা চাষের জন্য জমি ভাল ভাবে চাষ করে বিঘা প্রতি ৬ কেজি ইউরিয়া, ৩৬ কেজি সিঙ্গল সুপার ফসফেট এবং ১৬ কেজি মিউরিট অব পটাশ সার প্রয়োগ করতে হবে। তারপর চাষ দিয়ে মাটিকে ভালভাবে ঝুরঝুরে করে নেওয়া দরকার। চারার বয়স একমাস হওয়ার পরে বিঘা প্রতি ৬ কেজি ইউরিয়া গাছের গোড়াতে প্রয়োগ করতে হবে। অনেকে মাদাতে সার প্রয়োগ করতে পছন্দ করেন। এমন অবস্থায় মাদা প্রতি ৫০ গ্রাম ইউরিয়া, ৫০ গ্রাম সিঙ্গল সুপার ফসফেট এবং ১০০ গ্রাম মিউরেট অব পটাশ সার বীজ বুনার আগেই প্রয়োগ করতে হবে। পচন সার বা ভার্মিকপাস্ট ইত্যাদি প্রয়োগ করলে গাছের বৃদ্ধি ভাল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জমির মানও ভাল থাকে। শশা গাছের গোড়া থেকে আগাছা নিড়ানী দিয়ে পরিস্কার করে রাখতে হয়। এবং লত ধরার সময় পলা দিতে হবে।

শশা চাষে পাউডারি মিলভিউ রোগসহ অনেক ধরনের রোগ এবং পোকার আক্রমণ হয়। নিকটস্থ কৃষি স¤প্রসারণ বিভাগের বিশেষঙ্গদের সঙ্গে আলাপ করে প্রয়োজনীয় ওষুধ ব্যবহার করলে রোগ দমন সম্ভব ।

শরীরকে ঠান্ডা ও নীরোগ রাখতে শশার গুণ অপরিসীম। শশা খেলে শরীরের ঠান্ডাভাব বজায় থাকে এবং শরীরে সজীবতা আসে। শশায় পটাশিয়াম, সোডিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, গন্ধক, সিলিকান, ক্লোরিন এবং ফ্লোরিন পর্যাপ্ত মাত্রায় থাকে। এছাড়াও শশায় ক্যালশিয়াম, ফসফরাস, আয়রন, ভিটামিন-সি এবং বি-ও প্রচুর মাত্রায় থাকে।

আরো দেখুন: হাঁসের ডিমের উপকারিতা

শশা পেটের রোগে ঔষুধির কাজ করে। পেটের অ¤øতাকে দূর করে এবং আলসার রোগে উপকার আসে। শশার রস দিনে ২/৩ বার খেলে পেটের রোগ দূর হবে। নিয়মিত লবন মেখে খাবার আগে শশা খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়। জন্ডিসে শশার রস পান করলে উপকার হয়। প্রস্রাব করা অবস্থায় অনেক সময় জ্বালা-যন্ত্রণাও হয়। এ রোগে শশা খুব ভাল ঔষুধ।

শশা খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পানি খাওয়া উচিত নয়। যেসব ব্যক্তির অ্যাসিডিটির সমস্যা আছে তাদের খাদ্য-তালিকায় শশা রাখা প্রয়োজন। শশায় প্রচুর মাত্রায় পানি থাকে। গরমের দিনে শশা খেলে শরীরের শুস্কতা দূর হয়। ত্বকের রোগেও শশা উপকারী। এটা ত্বকের উজ্জ¦লতা বাড়িয়ে তোলে এবং দাগ দুর করতে সাহায্য করে। গাজরের রসের সঙ্গে শশার রস মিশিয়ে পান করলে লাভ হয়। শশার রস ত্বকের জন্য এক বিশেষ ধরনের টনিকের কাজ করে। মুখে ব্রণ-ফুসকুড়ি, কালো দাগ, ত্বকে ভাঁজ পড়া ইত্যাদিতে শশার রস লাগালে উপকার হয়। শশায় সিলিকান এবং সালফার থাকায় ত্বককে সুন্দর করে এবং ত্বককে সংক্রামণের হাত থেকে রক্ষা করে। নিয়মিত শশা খেলে বিভিন্ন ধরনের রোগের হাত থেকে মুক্তি লাভ সম্ভব।

Source: dailyinqilab.com

Leave a Comment